Daily Kaler Naraynganj: এবার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের পর আওয়ামী লীগের সরকারের চরম পরাজয়ের পর পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল ওরফে অটো রাসেল মামলার আসামী হয়ে অন্যত্র অবস্থানের পর এবার নতুন পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদারের নাম ব্যবহারের পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি নেতাদের নামে নগরের জিমখানা ও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জুয়ার রাম রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছে সেই জুয়ার গডফাদার বড় শাহজাহান।
অসংখ্য বার গ্রেফতারের ছাড়াও কিছুদিন পূর্বেও শহরের ৩ নং মাছ ঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে জুয়ার আসর বন্ধ করে দেয় পুলিশ।এরপরও বন্ধ হয় নাই জুয়ার রমরমা কর্মকান্ড ।
এর পূর্বে অসংখ্য দফা গ্রেফতার করেছিল এই বোর্ড পরিচালনকারি বড় শাহজাহানকে। কিন্তু এরপরও জুয়াড়ি প্রায় দুই মাস যাবৎ বীরদর্পে জুয়ার আসর চালিয়ে যাচ্ছে ।
একই সাথে পুলিশের একজন কর্মকর্তাকে চুক্তি মোতাবেক প্রতিমাসে (১০০০০০) টাকায় জুয়া চালাচ্ছে বলে দম্ভ করে মন্তব্য করছে জুয়ার গডফাদার বড় শাহজাহান । একই সাথে বিশেষ পেশার নামধারী এক মাদক ব্যবসায়ী যিনি একধারে পুলিশের সোর্স আবার একটি ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিযেবে পরিচিত, তাকে জুয়া থেকে প্রতিদিন ৫ হাজার টাকা দেয়া হয় প্রত্রিকা ম্যানেজ করতে।
এ ছাড়াও জানা গেছে, কিছু বিশেষ পেশার ব্যক্তির ছত্রচ্ছায়ায় শহরে শুরু হয়েছিল জুয়ার আসর। শুরুতে কালির বাজারের এই আসর শুরু হলেও পরবর্তীতে এর বিস্তার ঘটে মাছ ঘাট এলাকা পর্যন্ত। দিনরাত্রি ২৪ ঘণ্টাই শহর ও শহরতলী থেকে জুয়াড়িরা এখানে এসে ভিড় জমান এবং জুয়া খেলতেন। এ নিয়ে শহরময় আলোচনা সমালোচনা শুরু হলে তৎসময়কার এসপি হারুন অর রশীদের নির্দেশ থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ ওই দুটি জুয়ার আস্তানায় ব্লকড রেড দেয়।
সূত্র জানায়, বিগত সময়ে থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ যৌথভাবে ওই দুটি জুয়ার আসর গুঁড়িয়ে দিয়ে ৪১ জনকে আটক করে। তবে, এর মূলহোতা বড় শাহজাহান ও ছোট শাজাহান থেকে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এরপর বেশ কিছুদিন পর্যন্ত শহরে জুয়ার আসর বন্ধ থাকে। কিন্তু পরবর্তীতে কিছুদিন বিরতি দিয়ে শহরের জিমখানা এলাকায় ওয়ালটন শোরুমের কাছে ফের বসে জুয়ার আসর। খবর পেয়ে এখানে অভিযান চালায় পুলিশ। তবে, কাউকে গ্রেফতার করতে না পারলে আসরটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে এতকিছুর পরও পুনরায় জুয়ার আসর বসায় বড় শাহজাহান। এবার সেই পূর্বের স্থান নারায়ণগঞ্জ বাস টার্মিনাল এলাকা ঘেঁষা ৩ নং মাছঘাট এলাকা। তবে, কদিন এই জুয়ার আসর চলার পর ফের অভিযান চালায় র্যাব-১১। আটক করা হয় ২৮ জন জুয়াড়িকে। এবারও ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় বড় শাহজাহান।
এদিকে একের পর এক অভিযান চালিয়ে জুয়ার আসর বন্ধ করে দেওয়াসহ অসংখ্য মানুষকে আটক করার পরও পুনরায় আসর জমায় বড় শাহজাহান। নানা কৌশলে সে শহরের জিমখানা ওয়ালটন শোরুমের পিছনে এলাকায় এসব আসর বসায়। তবে, এসব আসরে এবার আর তার সঙ্গে সাথী হয়নি পূর্বে যারা তার এসব জুয়ার আসরের অংশিদার ছিলেন। ফলশ্রুতিতে সে এককভাবেই এসব জুয়ার আসর চালাতে থাকে গুটি কয়েক বিকৃত রুচির বিশেষ পেশার ব্যক্তিকে ম্যানেজ করে।
সূত্র জানিয়েছে, বড় শাজাহান এবার কৌশলের আশ্রয় নিয়ে জুয়ার বোর্ড চালিয়ে আসছিল। সে থানা পুলিশের বড় কর্তাকে ম্যানেজ করতে না পেরে থানার কয়েকজন গাড়ি চালককে ম্যানেজ করে। যাতে অভিযানের পূর্বে খবরটা তাকে পৌঁছানো হয়। এছাড়া শহরের জিমখানায় ওয়ালটন শোরুমের িন েচ সে পাহারা বসায়। যাতে করে পুলিশ অভিযানে এলে তার নিয়োগকৃত লোকজন তার কাছে খবর পৌঁছাতে পারে। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে বীরদর্পে জুয়ার আসর চালিয়ে আসছে বড় শাহজাহান।
এদিকে বারবার অভিযান চালানোর পরও কোন ক্ষমতাবলে জিমখানায় বড় শাহজাহান শহরের বুকে এভাবে জুয়ার আসর বসানোর সাহস করে! এ নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। বলা হচ্ছে, তার পিছনে শক্তিশালী কোনো না কোনো চক্র রয়েছে। সেই প্রভাবেই বড় শাহজাহান জুয়ার বোর্ড বসানোর সাহস দেখাতে পারে। এছাড়াও জুয়া আইনে কাউকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করার পর ২০০ টাকা জরিমানা দিলেই জামিনে বের হয়ে আসতে পারে। যার ফলে এসব জুয়াড়িদের মাঝে কোনো রকম ভয়ভীতি আর কাজ করে না। এ নিয়ে পুলিশের কণ্ঠেও অসহায়ত্ব ফুটে উঠে।
এদিকে পুলিশের একজন কর্মকর্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে জানান, পুলিশ দেখে জুয়াড়িরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ জুয়ার আসরটি নিয়ে উর্ধতন কর্মকর্তারা আপত্তি করেন। তাদের কোন ডিসটার্ব যাতে না ঘটে সেই নির্দেশনাও দেয়। আমরা নিরূপায় বলে মন্তব্য করেন ওই কর্মকর্তা।